আমরা সবাই জানি যে ফেসবুক থেকে আয় করতে হলে প্রথমে Facebook Page বা Profile মনেটাইজ করতে হয়। মনেটাইজেশনের পর বিজ্ঞাপন থেকে আয় শুরু হয়। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, ফেসবুক মনেটাইজ না করেও এখান থেকে ভালো পরিমাণ টাকা আয় করা সম্ভব।

এটা কোনো মজা নয় – একেবারেই সত্যি। এমন অনেক ক্রিয়েটর আছেন যারা শুধুমাত্র কিছু বিশেষ ধরনের কনটেন্ট তৈরি করে প্রতি মাসে কয়েক লাখ টাকা আয় করছেন।
ফেসবুক পেজের উদাহরণ
ধরা যাক, একটি ফেসবুক পেজ “Mr. Viral Blogs”। এই পেজে ৩.৭ মিলিয়ন ফলোয়ার রয়েছে। অথচ এই পেজটি খুব বেশি পুরোনো নয়, ২০২3 সালে তৈরি হয়েছে।
এখন যদি আমরা এর ভিডিও সেকশন দেখি, তবে দেখা যাবে—
-
কিছু ভিডিওতে ৭২ লাখ ভিউ
-
আবার কোনো ভিডিওতে ২৮ মিলিয়ন ভিউ
-
প্রায় সব ভিডিওতেই লাখ লাখ ভিউ
অর্থাৎ নিয়মিত ভিডিও আপলোড করলেই ফেসবুকের অ্যালগরিদম ভিডিওগুলোকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়।
কী ধরনের ভিডিও বানাবেন?
👉 সবচেয়ে জনপ্রিয় হয় লোকাল কনটেন্ট বা স্ট্রিট ফুড ভিডিও।
যেমন –
-
কোনো হোটেল বা রেস্টুরেন্টে কীভাবে খাবার বানানো হয়
-
স্থানীয় বাজারের বিশেষ খাবার বা পানীয়
-
স্ট্রিট ফুড বিক্রেতার কাজের ভিডিও
এই ধরনের ভিডিও মানুষ প্রচুর পছন্দ করে। আর এই ভিডিওগুলো স্ক্রিপ্টেডও হতে পারে। যেমন, একজন বিক্রেতাকে কিছু ডায়লগ বলে দিতে পারেন এবং সেটাকে ভিডিওতে ক্যাপচার করতে পারেন।
ভিডিও বানানোর কৌশল
-
লোকাল জায়গা কভার করুন – দূরে যেতে হবে না, নিজের শহর বা গ্রামে ছোট ছোট হোটেল, দোকান, বাজার থেকেই শুরু করতে পারেন।
-
পারমিশন নিন – দোকানদারের অনুমতি নিয়ে ভিডিও বানান। এতে বিশ্বাস তৈরি হয়।
-
রেগুলার ভিডিও আপলোড করুন – দিনে অন্তত ১টি ভিডিও দিন যাতে ফেসবুক বুঝতে পারে আপনি নিয়মিত ক্রিয়েটর।
-
ওরিজিনাল কনটেন্ট দিন – কপি করা ভিডিও নয়, নিজের তৈরি কনটেন্ট দিন।
মনেটাইজেশন ছাড়াই আয় করার উপায়
প্রথমে ভেবে নিন, টাকা আসবে কীভাবে?
👉 মূল উৎস হলো লোকাল স্পন্সরশিপ।
উদাহরণস্বরূপ,
-
যদি আপনার ভিডিওতে গড়ে ১০০০ ভিউ আসে, তবে স্থানীয় দোকানদারদের কাছে গিয়ে বলুন:
“আমি আপনার দোকানের প্রমোশনাল ভিডিও বানাবো, এর জন্য আমার চার্জ ₹৫০০–₹১০০০।”
একজন দোকানদার সহজেই এই টাকা দেবেন, কারণ তাঁর দোকানে কাস্টমার বাড়বে।
আর যখন ভিডিওতে ভিউ লাখ ছাড়াবে, তখন আপনার স্পন্সরশিপ রেট কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
বাস্তব আয় সম্ভাবনা
-
একজন নতুন ক্রিয়েটর ২–৩ মাস নিয়মিত ভিডিও দিলে অন্তত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়।
-
ভাইরাল ভিডিও মানেই – ফলোয়ার বাড়বে, স্পন্সরশিপ আসবে।
-
অনেক ফুড ব্লগার এখন শুধু স্পন্সরশিপ থেকে মাসে ৫-৮ লাখ টাকা আয় করছেন।
-
এমনকি ছোট শহরের ক্রিয়েটররাও মাসে কয়েক হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকা আয় করছেন।
শেষ কথা
ফেসবুক শুধু মনেটাইজেশন থেকে আয় করার মাধ্যম নয়।
👉 ওরিজিনাল কনটেন্ট
👉 লোকাল প্রমোশন
👉 নিয়মিত ভিডিও আপলোড
এই তিনটি নিয়ম মেনে কাজ করলে ফেসবুক থেকেই লাখ টাকার আয় সম্ভব। তবে মনে রাখবেন, মেহনত ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। নিয়মিত ও ধারাবাহিক কাজই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।




