আজকের দিনে যদি আপনি ক্যারিয়ারের জন্য কিছু নতুন খুঁজছেন বা অনলাইনে নিজের জায়গা বানাতে চাইছেন, তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং একেবারে সঠিক দিশা।
👉 একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান দেখি – শুধু 2024 সালেই ভারতে ৯ লক্ষের বেশি ডিজিটাল মার্কেটিং জব তৈরি হয়েছে। আর 2025 সালের মধ্যে এই ইন্ডাস্ট্রি হতে চলেছে প্রায় ১৬০ বিলিয়ন ডলারের।
শুধু ভারতে নয়, পুরো পৃথিবীতেই ডিজিটাল মার্কেটিং এখন টপ ১০ ইন-ডিমান্ড জব ক্যাটাগরির মধ্যে আছে। মানে, আপনি যদি জব চান, ফ্রিল্যান্সিং করতে চান, বা নিজের এজেন্সি শুরু করতে চান – এই ইন্ডাস্ট্রিতে অসংখ্য সুযোগ আপনার জন্য অপেক্ষা করছে।

কেন সবার জন্য নয় এই ইন্ডাস্ট্রি?
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে দুই ধরণের মানুষ দেখা যায় –
-
যারা ইউটিউব দেখে, শর্টকাট খুঁজে, একদম ফ্রি তে টাকা কামাতে চায়।
-
আর যারা আসলেই স্কিল শিখে ক্যারিয়ার গড়তে চায়।
প্রথম ক্যাটাগরির মানুষরা কয়েকদিন চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। কিন্তু দ্বিতীয় ক্যাটাগরির মানুষরাই সফল হয়, কারণ তারা সময় দেয় স্কিল শেখায়।
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে 👉 আপনি কোন ক্যাটাগরিতে পড়তে চান?
প্রথম ধাপ: নিজের ইন্টারেস্ট চিহ্নিত করুন
ডিজিটাল মার্কেটিং একটা বড় ছাতা। এর ভেতরে ক্রিয়েটিভ, টেকনিক্যাল আর রিসার্চ বেসড – তিন ধরণের কাজ রয়েছে।
🔹 আপনি যদি ক্রিয়েটিভ হন → সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট, ভিডিও মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, অ্যাড ডিজাইন আপনার জন্য সেরা।
🔹 টেকনিক্যাল ইন্টারেস্ট থাকলে → SEO, বিজ্ঞাপন রান (Google Ads, Facebook Ads), ওয়েব অ্যানালিটিক্স আপনার জন্য।
🔹 রিসার্চ ভালো লাগলে → ব্র্যান্ড স্ট্র্যাটেজি, মার্কেট রিসার্চ, ডেটা অ্যানালিটিক্স বেছে নিতে পারেন।
👉 সঠিক পথে এগোতে হলে আগে নিজের ইন্টারেস্ট বোঝা খুব জরুরি।
দ্বিতীয় ধাপ: ট্রেন্ড এবং মার্কেট বুঝুন
আজকের দিনে আপনি ইন-হাউস টিমে কাজ করতে পারেন অথবা কোনো এজেন্সিতে।
-
ইন-হাউস টিম মানে কোনো ব্র্যান্ডের ডিজিটাল মার্কেটিং টিমে কাজ করা।
-
এজেন্সি মানে একসাথে একাধিক ক্লায়েন্টের কাজ হ্যান্ডেল করা।
👉 ইন-হাউসে কাজ করলে সিকিউরিটি থাকে, কিন্তু গ্রোথ ধীরে হয়।
👉 এজেন্সিতে কাজ করলে চ্যালেঞ্জ বেশি, কিন্তু ক্যারিয়ার গ্রোথ ও শেখার সুযোগ অনেক।
তৃতীয় ধাপ: ক্যাটাগরি সিলেক্ট করা
এখনকার দিনে এজেন্সিগুলো অনেক সময় এক্সপার্টাইজ দেখায় – যেমন কেউ শুধু রিয়েল এস্টেট ক্লায়েন্ট নেয়, কেউ হেলথ কেয়ার, আবার কেউ ই-কমার্স।
তাহলে আপনাকেও প্রথমে একটা নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি বেছে নিতে হবে। পরে ধীরে ধীরে সেটা থেকে আপনি অন্য অনেক জায়গায় এক্সপান্ড করতে পারবেন।
চতুর্থ ধাপ: শেখার প্রক্রিয়া
অনেকে ভাবে বড় বড় ইনস্টিটিউটে ভর্তি না হলে কিছু শেখা যায় না। কিন্তু আসল ব্যাপার হলো – ডিজিটাল মার্কেটিং প্র্যাকটিকাল কাজ করে শেখা যায়।
🔸 প্রথমে ইউটিউব বা গুগল থেকে বেসিক শিখুন।
🔸 তারপর প্র্যাকটিশনারদের থেকে ছোট কোর্স নিন (যারা রিয়েল লাইফে কাজ করেছে)।
🔸 অন্তত ৬–৭ মাস একদম ডেডিকেটেড সময় দিন একটা স্কিল শেখায়।
মনে রাখবেন 👉 এক মাসে কোনো স্কিল মাস্টার করা যায় না।
পঞ্চম ধাপ: জব বা ক্লায়েন্ট পাওয়া
আপনি শিখলেন, কিন্তু কাজ কোথা থেকে পাবেন?
এর জন্য তিনটা পথ আছে –
-
ফ্রিল্যান্সিং – ছোট ছোট প্রোজেক্ট নিয়ে এক্সপেরিয়েন্স তৈরি করুন।
-
ইন্টার্নশিপ – পেইড হোক বা আনপেইড, ইন্টার্নশিপ করলে হাতে-কলমে শেখা যায়।
-
নেটওয়ার্কিং – LinkedIn, Twitter, YouTube এর মতো জায়গায় নিজের কাজ শেয়ার করুন।
👉 শুরুতে আপনার ভিডিওতে লাখো ভিউ না এলেও চিন্তা নেই। ২০০–৩০০ ভিউতেও একজন ক্লায়েন্ট আপনাকে কাজ দিতে পারে।
কেন ফ্রিল্যান্সিং থেকে শুরু করবেন?
-
এক্সপোজার পাবেন।
-
নিজে নিজে ক্লায়েন্ট সামলাতে শিখবেন।
-
পরে সহজেই জব বা এজেন্সি লেভেল প্রোজেক্টে ঢুকতে পারবেন।
একজন মার্কেটারের ভ্যালু বাড়ে তখনই, যখন সে নিজের ব্র্যান্ড বানাতে পারে।
2025-এ ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার গড়তে যেসব বিষয় জরুরি
-
আপ-টু-ডেট থাকা – নতুন টুলস, AI, ট্রেন্ডস সবসময় ফলো করুন।
-
রিসার্চ ও স্ট্র্যাটেজি – শুধু কাজ জানা যথেষ্ট নয়, ফলাফল ডেলিভার করতে হবে।
-
রেজাল্ট-ড্রিভেন অ্যাপ্রোচ – কোম্পানি বা ক্লায়েন্টরা কেবল সেসব মার্কেটারকেই রাখবে যারা আউটপুট দিতে পারে।
শেষ কথা
ডিজিটাল মার্কেটিং এখন আর অপশন নয়, বরং প্রতিটি কোম্পানির জন্য নেসেসিটি। যেমন HR দরকার, তেমনি আজকের দিনে প্রতিটি ব্র্যান্ডকে বাঁচিয়ে রাখতে ডিজিটাল মার্কেটিং দরকার।
তাহলে যদি আপনিও ক্যারিয়ার নিয়ে সিরিয়াস হন, এখনই শুরু করুন। কারণ যত দেরি করবেন, প্রতিযোগিতা তত বাড়বে।
সোর্সঃ https://youtu.be/iJNdedfi7aA
এছাড়া পড়ুনঃ




