আজকের এই ব্লগ পোস্টে আমরা বিস্তারিত দেখব কীভাবে আপনি খুব সহজে ফেসবুক অ্যাডস ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটে ট্র্যাফিক আনতে পারবেন। যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করেন বা নিজের কোনো ই-কমার্স/ব্লগ সাইট চালান, তাদের জন্য এই টপিকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

১. ওয়েবসাইট তৈরি ও প্রাথমিক সেটআপ
আমরা আগের ধাপে একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করেছি এবং সেখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাগইন ইনস্টল করেছি। এই প্লাগইনের মাধ্যমে আমরা ভিজিটরদের ট্র্যাফিকের তথ্য খুব সহজেই ট্র্যাক করতে পারব।
ওয়েবসাইট যখন সুন্দরভাবে তৈরি হয়ে যায়, তখন পরবর্তী ধাপ হলো – কন্টেন্ট র্যাংক করানো এবং সেই কন্টেন্টে অডিয়েন্স আনা।
👉 অর্গানিক কন্টেন্ট দিয়ে গুগল সার্চ থেকে ভিজিটর আসবে।
👉 কিন্তু সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম হলো Facebook Ads।
২. ফেসবুক পেজ তৈরি
ফেসবুক অ্যাড চালাতে হলে আগে একটি পেজ থাকতে হবে।
-
Create Page এ ক্লিক করুন।
-
নাম দিন, ক্যাটেগরি সিলেক্ট করুন।
-
লোগো ও কভার ফটো আপলোড করুন।
-
আর হয়ে গেল আপনার বিজনেস পেজ।
এই পেজই আপনার অ্যাডকে রিপ্রেজেন্ট করবে।
৩. অ্যাড ম্যানেজার ও বিলিং সেটআপ
ফেসবুক অ্যাড চালানোর জন্য Ads Manager এ যেতে হবে।
প্রথমবার গেলে ফেসবুক আপনাকে পেমেন্ট সেটআপ করতে বলবে।
আপনি ব্যবহার করতে পারেন –
-
ক্রেডিট কার্ড / ডেবিট কার্ড
-
নেট ব্যাংকিং
-
প্রিপেইড মেথড
পেমেন্ট সেটআপ হয়ে গেলে আপনার অ্যাড অ্যাকাউন্ট রেডি।
৪. নতুন অ্যাড ক্যাম্পেইন তৈরি
Ads Manager-এ গিয়ে Create এ ক্লিক করুন।
এখানে আপনি দেখতে পাবেন তিনটি প্রধান জিনিস –
-
Campaign Objective (যেমন: Traffic)
-
Audience (কাদের টার্গেট করবেন)
-
Budget & Schedule
উদাহরণ:
ধরুন, আপনি Mobile Accessories ওয়েবসাইট প্রমোট করছেন।
-
Objective: Traffic
-
Audience: পুরো ভারত (India), বয়স 18–45+, All Gender
-
Budget: দিনে ₹100 (সিস্টেম টেস্ট করার জন্য একদম পারফেক্ট)
এই বাজেটে আনুমানিক 500–800 লোক আপনার অ্যাডে ক্লিক করবে।
৫. অডিয়েন্স টার্গেটিং কৌশল
যদি আপনার ওয়েবসাইট নির্দিষ্ট কোনো পণ্য নিয়েই হয় (যেমন Kids Toys), তাহলে কাস্টম অডিয়েন্স তৈরি করা জরুরি।
ফেসবুক টার্গেটিং-এ সহজেই পাওয়া যায়:
-
Parents with toddlers (1–2 yrs)
-
Parents with kids (3–5 yrs)
-
Parents of teenagers
এভাবে নির্দিষ্ট গ্রুপকে টার্গেট করলে অপ্রয়োজনীয় ক্লিক আসবে না।
৬. অ্যাড ক্রিয়েটিভ – সিঙ্গেল ইমেজ বনাম কারাউজেল অ্যাড
ফেসবুক অ্যাডে দুটি জনপ্রিয় ফরম্যাট আছে:
-
Single Image Ad
-
Carousel Ad – একসাথে একাধিক প্রোডাক্ট শো করার জন্য পারফেক্ট।
Carousel Ad-এ আপনি একসাথে ৪–৫টি প্রোডাক্টের ইমেজ ও লিংক ব্যবহার করতে পারবেন।
👉 যেমন:
-
প্রথম কার্ডে হেডফোন
-
দ্বিতীয় কার্ডে কার চার্জার
-
তৃতীয় কার্ডে কার মাউন্ট
-
চতুর্থ কার্ডে স্মার্টওয়াচ
একই অ্যাড থেকে একাধিক প্রোডাক্টে ট্র্যাফিক পাঠানো যাবে, ফলে কনভার্শনের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।
৭. প্রিভিউ ও পাবলিশ
অ্যাড সেটআপ করার পর ফেসবুক আপনাকে Preview দেখাবে –
-
মোবাইল ভিউ
-
ডেস্কটপ ভিউ
সবকিছু ঠিক থাকলে Publish এ ক্লিক করুন।
অ্যাড রিভিউ হবে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই লাইভ হয়ে যাবে।
৮. খরচ ও রিটার্ন (ROI)
শুরুতে ছোট বাজেটে (₹100–₹200/day) টেস্ট করে দেখতে হবে।
যদি রেজাল্ট ভালো আসে, বাজেট বাড়িয়ে দিন।
ধরে নিন –
-
১ দিনে ₹100 খরচে আপনি 500 ভিজিটর আনলেন।
-
যদি এর মধ্যে মাত্র ৫ জনও পণ্য কিনে, তবে কমিশনের মাধ্যমে সহজেই খরচ উঠে আসবে।
এটাই ফেসবুক অ্যাডসের আসল শক্তি – কম খরচে টার্গেটেড ট্র্যাফিক।
উপসংহার
ফেসবুক অ্যাডস হলো সবচেয়ে দ্রুত এবং কার্যকর উপায় আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনার।
-
অর্গানিক কন্টেন্ট SEO-এর জন্য ভালো, কিন্তু সময়সাপেক্ষ।
-
ফেসবুক অ্যাডস আপনাকে তাৎক্ষণিক ফলাফল দেয়।
তাই যারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, ই-কমার্স বা সার্ভিস প্রমোশন করছেন, তারা অবশ্যই ফেসবুক অ্যাডস ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
এছাড়া পড়ুনঃ
Facebook Ads: কম খরচে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর জন্য লিড আনার গোপন কৌশল




